বিশেষ প্রতিবেদন-

মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র মানবাধিকার ইতিহাসের একটি মাইলফলক । বিশ্বের সমস্ত অঞ্চল থেকে বিভিন্ন আইনী এবং সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিদের দ্বারা প্রণীত ঘোষণাপত্রটি প্যারিসে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন দ্বারা ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর        ( সাধারণ অধিবেশন রেজোলিউশন ২১৭ এ ) সকলের জন্য ঘোষণা করা হয়েছিল। তাই প্রতি বছর ১০ ডিসেম্বরকে মানবাধিকার দিবস হিসাবে পালন করা হয়। এটি মৌলিক মানবাধিকারকে সর্বজনীনভাবে সুরক্ষিত করার জন্য নির্ধারণ করেছে এবং ৫০০ শতাধিক ভাষায় এই ঘোষণাপত্র অনুবাদ করা হয়েছে । যেখানে মানব পরিবারের সকল সদস্যের অন্তর্নিহিত মর্যাদা, সম্মান এবং অবিচ্ছেদ্য অধিকারগুলির স্বীকৃতি, স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার, শান্তির ভিত্তি প্রস্তুত রয়েছে।
মানবাধিকার দিবসের এ বছরের প্রতিপাদ্য বিষয়- ঘুরে দাঁড়াবো আবার, সবার জন্য মানবাধিকার। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী এবারের দিবস ও প্রতিপাধ্য বিষয়ের উপর বিশেষ বাণী প্রদান করেছেন। জাতিসংঘের মহাসচিব এবং হাই-কমিশনার ও বিশেষ বাণী দিয়েছেন।
মানবাধিকারের প্রতি অবহেলা ও অবজ্ঞার ফলে মানবজাতির বিবেককে ক্ষুব্ধ করেছে এমন বর্বর কাজও হয়েছে। এমন এক সময়ের আগমন ঘটেছে যেখানে মানুষ বাক-স্বাধীনতা এবং বিশ্বাসের স্বাধীনতা উপভোগ থেকে বঞ্জিত হচ্ছে। ভীতি থেকে মানুষ মুক্তি পেতে চায়। অত্যাচার ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিহত করার জন্য সর্বশেষ উপায় হিসাবে আইনের শাসনের দ্বারা রক্ষা চায়। একটি দেশের সার্বিক উন্নয়নের পেছনে সেদেশের আইন শৃংখলা ও বিচার ব্যবস্থার গুরুত্ব অপরিসীম। শুধুমাত্র উন্নয়নই নয়, দেশ পরিচালনার পাশাপাশি সমাজের শান্তি শৃংখলা রক্ষায় সুনির্দিষ্ট এবং বাস্তব সম্মত সুষ্ঠু আইনের প্রয়োগ প্রয়োজন। সুষ্টু আইন প্রয়োগের জন্য প্রয়োজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ আইনবিদ।

মানবাধিকারের সংজ্ঞা
মানবাধিকার বলতে মানুষের যে কোন অধিকারকে বুঝায় না। মানবাধিকার শব্দটি বিশেষ অর্থে ব্যবহত হয়। আইনগত ও নৈতিক অধিকারগুলোর মধ্যে সেগুলোই মানবাধিকার যেগুলো র্পৃথিবীর সকল মানুষ শুধু মানুষ হিসাবে দাবী করতে পারে । এ অধিকারগুলো কোন দেশ বা কালের সীমানায় আবদ্ধ নয়, এগুলো চিরন্তন এবং

সর্বজনীন । পৃথিবীর প্রত্যেকটি মানুষ এ অধিকারগুলো নিয়েই জন্ম গ্রহন করে । নাগরিক অধিকারগুলো রাষ্ট্র ছিনিয়ে নিতে কিংবা স্থগিত করতে পারে, কিন্তÍু মানবাধিকার কেউ ছিনিয়ে নিতে পারে না। জাতিসংঘের সাধারন পরিষদ ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্র গ্রহন করে । এই ঘোষণায় ৩০টি ধারায় মানবাধিকারের কথা বলা হয়েছে। এগুলোই মানবাধিকার বলে বিশ্বব্যাপী পরিচিত। যখন কতিপয় মানবাধিকার কোন দেশের সংবিধানে লিপিবদ্ধ করা হয় এবং সাংবিধানিক নিশ্চয়তা দ্বারা সে সব অধিকার গুলো সংরক্ষণ করা হয়, তখন তাদেরকে মৌলিক অধিকার বলা হয়। মৌলিক অধিকার গুলো সবই মানবাধিকার, কিন্তু সব মানবাধিকার মৌলিক অধিকার নয়।

২. সমাবেশের স্বাধীনতা (অনুচ্ছেদ ৩৭)
৩. সংগঠনের স্বাধীনতা (অনুচ্ছেদ ৩৮)
৪. চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং বাক স্বাধীনতা (অনুচ্ছেদ ৩৯)
৫. পেশা বা বৃত্তির স্বাধীনতা (অনুচ্ছেদ ৪০)
৬. গৃহ ও যোগাযোগ মাধ্যমের সুরক্ষা

গ. মৌলিক অধিকার যা আইন বিভাগকে দেয়া হয়েছে
১. আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার (অনুচ্ছেদ ৩১)
২. জীবন ও ব্যাক্তি স্বাধীনতার অধিকাররক্ষণ (অনুচ্ছেদ ৩২)
৩. সম্পত্তির অধিকার (অনুচ্ছেদ ৪২)

মানবাধিকার নিয়ে করণীয়-
১. মানবাধিকারের সার্বিক বিষয়ে গভীরভাবে অধ্যয়ন ও যথাযথ অবগত হতে হবে ।
২. নিজ এলাকার বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও মানবাধিকার ব্যাক্তিত্বের সাথে সম্পর্ক তৈরী করা ও নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে ।
৩. নিজ এলাকায় কম পক্ষে ১৫-২০ জন আগ্রহী ও নিবেদিত জনশক্তির সমন্বয়ে একটি মানবাধিকার টিম তৈরী এবং তাদের প্রশিক্ষণের ব্যাবস্থা করতে হবে ।
৪. মানবাধিকার সংগঠনের কেন্দ্র থেকে অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে ।
৫. মানবাধিকার লংঘনের বিষয় গুলো সামাজিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে (ফেসবুক টুইটার বøগ পত্রিকা টিভি) প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে ।
৬. নিয়মিত মানবাধিকার লংঘনের প্রতিবেদন যেমন- ঘটনার বিবরন (কে, কোথায়, কি, কখন, কেন, কিভাবে) আহত, নিহত, পঙ্গু, মামলা, আসামী, জেল, জামিন ইত্যাদি কেন্দ্রীয় মানবাধিকার বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট এলাকার মানবাধিকার সংগঠনের নিকট পৌছাতে হবে ।
৭. সমর্থক কর্মী ও আগ্রহী সাধারণ ছাত্রদের সমন্বয়ে শক্তিশালী স্বেচ্ছাসেবক টিম তৈরী করতে হবে।
৮. জনগণকে মানবাধিকার বষয়ে সচেতন করা ও মানবাধিকার বিষয়ে ক্যারিয়ার গঠনে উদ্ভুদ্ধ করতে হবে।
৯. মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দিবসে কর্মসূচী পাালন করতে হবে।
১০. মানবাধিকার লংঘিত হয়েছে এমন এলাকায় টিম প্রেরণ করা এবং সামর্থ্য অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করতে হবে । যেমন সংখ্যালঘু নির্যাতন, রাজনৈতিক সংঘাত, নারী ও শিশু নির্যাতন ইত্যাদি ।

কে বা কারা মানবাধিকার সংস্থায় অভিযোগ জানাবেন?
জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নারী, পুরুষ, স্বদেশী, বিদেশী নির্বিশেষে যে কোন নাগরিকই মানবাধিকার সংস্থায় কাছে তার অভিযোগ জানাতে পারেন। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যাক্তি নিজে অথবা তার পক্ষে অন্য কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্টানও অভিযোগ করতে পারবে।

অভিযোগের ধরন কি হতে পারে?
রাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক অধিকার লংঘন হলে বা লংঘনের আশংকা তৈরী হলে অথবা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনে বর্ণিত অধিকার লংঘিত হলে বা প্ররোচনা দিলেও অভিযোগ দায়ের করা যাবে।

অভিযোগ করার নিয়মাবলী কি?
সংস্থার নির্ধারিত ফরমে বা এ-৪ সাইজের সাদা কাগজে স্পষ্ট ও শুদ্ধ বানানে হাতে লিখে বা কম্পোজ করে দাপ্তরিক কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বা ডাকযোগে বা ইমেইল করে অভিযোগ দায়ের করা যাবে। অভিযোগের সাথে প্রামাণ্য দলিল, ছবি, ভয়েস রেকর্ড, ভিডিও চিত্র বা পেপার ক্লিপিং ইত্যাদি যদি থাকে তা সংযুক্ত করা যেতে পারে।

অভিযোগ গ্রহনের পর করণীয় কি?
কর্তৃপক্ষ প্রাপ্ত অভিযোগের আইনগত দিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করবে। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ পাওয়া গেলে মধ্যস্থতায় প্রথমে বিরোধ মীমাংসা ও সমঝোতার মাধ্যমে

২. সমাবেশের স্বাধীনতা (অনুচ্ছেদ ৩৭)
৩. সংগঠনের স্বাধীনতা (অনুচ্ছেদ ৩৮)
৪. চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং বাক স্বাধীনতা (অনুচ্ছেদ ৩৯)
৫. পেশা বা বৃত্তির স্বাধীনতা (অনুচ্ছেদ ৪০)
৬. গৃহ ও যোগাযোগ মাধ্যমের সুরক্ষা

গ. মৌলিক অধিকার যা আইন বিভাগকে দেয়া হয়েছে
১. আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার (অনুচ্ছেদ ৩১)
২. জীবন ও ব্যাক্তি স্বাধীনতার অধিকাররক্ষণ (অনুচ্ছেদ ৩২)
৩. সম্পত্তির অধিকার (অনুচ্ছেদ ৪২)

মানবাধিকার বলতে কি বুঝায়?
মানবাধিকার হচ্ছে মানুষের সহজাত আধিকার। যা মানুষ তার জন্ম গ্রহনের সাথে সাথে অর্জন করে থাকে। দৈনন্দিন জীবনে- মানুষের যে অধিকার,সার্বিক বিকাশ,সর্বোপরী অন্তরনিহিত প্রতিভা বিকাশের আবশ্যকতাই মানবাধিকার। যথার্থ জীবন যাপন, বেঁচে থাকার অধিকার, মতামত প্রকাশের অধিকার, অন্ন ব¯্র বাসস্থান শিক্ষা ও চিকিৎসা গ্রহনের অধিকার, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অংশ গ্রহনের অধিকারসহ সামাজিক অর্থনৈতিক সার্বিক কর্মকান্ডকেই আমরা মানবাধিকার বলতে পারি।
বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু অধিকারকেই মানবাধিকার বুঝায় না। এটা এমন এক ধরনের নৈতিক অধিকার যা মানুষ মানব জাতি হিসাবে প্রত্যেক ব্যাক্তি বা যে কোন ব্যাক্তি যৌক্তিক ক্ষেত্রে তার অধিকার দাবী করতে পারে । এই অধিকারটি মূলতঃ এমনই জন্মগত, যেখানে জাতি ধর্ম বর্ণ ভাষা রাজনীতি মতবাদ সব কিছুর উর্ব্ধে স্থান দিতে হবে । এগুলো মানুষের এমনই সহজাত অধিকার, যা ব্যতিত মানুষ বেঁচে থাকতে পারে না।

মানবাধিকারের প্রকারভেদ –
১. নাগরিক
২. রাজনৈতিক
৩. সামাজিক
৪. সাংস্কৃতিক
৫. অর্থনৈতিক

মানবাধিকারের মূলনীতি –
১. সার্বজনীনতা এবং অবিচ্ছেদ্যতা
২. ব্যাক্তিকেন্দ্রিকতা
৩. পারস্পরিক নির্ভরশীলতা ও আনÍসম্পর্কিয়তা
৪. সাম্যতা ও বৈষম্যহীনতা
৫. অংশগ্রহনমূলক ও অনর্Íভ’ক্তিকরনমুলক
৬. আইনের শাসন ও জবাবদিহীতা

বাংলাদেশের সংবিধানে মানবাধিকার –
বাংলাদেশের সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকারকে ৩ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা-

ক. নিরংকুশ অধিকার
১. আইনের দৃষ্টিতে সমতা (অনুচ্ছেদ ২৭)
২. ধর্ম ও প্রভৃতি কারণে বৈষম্য (অনুচ্ছেদ ২৮)
৩. সরকারী নিয়োগ লাভে সুযোগের সমতা (অনুচ্ছেদ ২৯)
৪. বিদেশী খেতাব প্রভৃতি গ্রহন নিষিদ্ধকরন (অনুচ্ছেদ ৩০)
৫. গ্রেফতার ও আটক সম্পর্কে রক্ষাকবচ (অনুচ্ছেদ ৩৩)
৬. জবরদস্তি-শ্রম নিষিদ্ধকরন (অনুচ্ছেদ ৩৪)
৭. বিচার ও দন্ড সম্পর্কে রক্ষণ (অনুচ্ছেদ ৩৫)
৮. মৌলিক অধিকার বলবৎকরন (অনুচ্ছেদ ৪৪)

খ. শর্তাধীন অধিকার
১. চলাফেরার স্বাধীনতা (অনুচ্ছেদ ৩৬)

২. সমাবেশের স্বাধীনতা (অনুচ্ছেদ ৩৭)
৩. সংগঠনের স্বাধীনতা (অনুচ্ছেদ ৩৮)
৪. চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং বাক স্বাধীনতা (অনুচ্ছেদ ৩৯)
৫. পেশা বা বৃত্তির স্বাধীনতা (অনুচ্ছেদ ৪০)
৬. গৃহ ও যোগাযোগ মাধ্যমের সুরক্ষা

গ. মৌলিক অধিকার যা আইন বিভাগকে দেয়া হয়েছে
১. আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার (অনুচ্ছেদ ৩১)
২. জীবন ও ব্যাক্তি স্বাধীনতার অধিকাররক্ষণ (অনুচ্ছেদ ৩২)
৩. সম্পত্তির অধিকার (অনুচ্ছেদ ৪২)

মানবাধিকার নিয়ে করণীয়-
১. মানবাধিকারের সার্বিক বিষয়ে গভীরভাবে অধ্যয়ন ও যথাযথ অবগত হতে হবে ।
২. নিজ এলাকার বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও মানবাধিকার ব্যাক্তিত্বের সাথে সম্পর্ক তৈরী করা ও নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে ।
৩. নিজ এলাকায় কম পক্ষে ১৫-২০ জন আগ্রহী ও নিবেদিত জনশক্তির সমন্বয়ে একটি মানবাধিকার টিম তৈরী এবং তাদের প্রশিক্ষণের ব্যাবস্থা করতে হবে ।
৪. মানবাধিকার সংগঠনের কেন্দ্র থেকে অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে ।
৫. মানবাধিকার লংঘনের বিষয় গুলো সামাজিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে (ফেসবুক টুইটার বøগ পত্রিকা টিভি) প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে ।
৬. নিয়মিত মানবাধিকার লংঘনের প্রতিবেদন যেমন- ঘটনার বিবরন (কে, কোথায়, কি, কখন, কেন, কিভাবে) আহত, নিহত, পঙ্গু, মামলা, আসামী, জেল, জামিন ইত্যাদি কেন্দ্রীয় মানবাধিকার বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট এলাকার মানবাধিকার সংগঠনের নিকট পৌছাতে হবে ।
৭. সমর্থক কর্মী ও আগ্রহী সাধারণ ছাত্রদের সমন্বয়ে শক্তিশালী স্বেচ্ছাসেবক টিম তৈরী করতে হবে।
৮. জনগণকে মানবাধিকার বষয়ে সচেতন করা ও মানবাধিকার বিষয়ে ক্যারিয়ার গঠনে উদ্ভুদ্ধ করতে হবে।
৯. মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দিবসে কর্মসূচী পাালন করতে হবে।
১০. মানবাধিকার লংঘিত হয়েছে এমন এলাকায় টিম প্রেরণ করা এবং সামর্থ্য অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করতে হবে । যেমন সংখ্যালঘু নির্যাতন, রাজনৈতিক সংঘাত, নারী ও শিশু নির্যাতন ইত্যাদি ।

কে বা কারা মানবাধিকার সংস্থায় অভিযোগ জানাবেন?
জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নারী, পুরুষ, স্বদেশী, বিদেশী নির্বিশেষে যে কোন নাগরিকই মানবাধিকার সংস্থায় কাছে তার অভিযোগ জানাতে পারেন। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যাক্তি নিজে অথবা তার পক্ষে অন্য কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্টানও অভিযোগ করতে পারবে।

অভিযোগের ধরন কি হতে পারে?
রাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক অধিকার লংঘন হলে বা লংঘনের আশংকা তৈরী হলে অথবা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনে বর্ণিত অধিকার লংঘিত হলে বা প্ররোচনা দিলেও অভিযোগ দায়ের করা যাবে।

অভিযোগ করার নিয়মাবলী কি?
সংস্থার নির্ধারিত ফরমে বা এ-৪ সাইজের সাদা কাগজে স্পষ্ট ও শুদ্ধ বানানে হাতে লিখে বা কম্পোজ করে দাপ্তরিক কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বা ডাকযোগে বা ইমেইল করে অভিযোগ দায়ের করা যাবে। অভিযোগের সাথে প্রামাণ্য দলিল, ছবি, ভয়েস রেকর্ড, ভিডিও চিত্র বা পেপার ক্লিপিং ইত্যাদি যদি থাকে তা সংযুক্ত করা যেতে পারে।

অভিযোগ গ্রহনের পর করণীয় কি?
কর্তৃপক্ষ প্রাপ্ত অভিযোগের আইনগত দিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করবে। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ পাওয়া গেলে মধ্যস্থতায় প্রথমে বিরোধ মীমাংসা ও সমঝোতার মাধ্যমে

নিস্পত্তির উদ্যোগ নেবে। নিস্পত্তির সকল উদ্যোগ ব্যার্থ হলে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে। কেউ অভিযোগ করলেই মানবাধিকার প্রতিষ্টান তার পক্ষে পক্ষপাতিত্ব করে না। অভিযুক্ত বা অভিযোগকারীকে সমান দৃষ্টিতে ও যথাযথ সম্মানের সাথে দেখা হয়। আইন সম্মতভাবে পৃথক দুটি পক্ষকেই আইন সহায়তা দেয়া হয়।

জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল
১৫ মার্চ ২০০৬ প্রতিষ্টিত হয় জাতিসংঘ মারবাধিকার কাউন্সিল। মোট ৪৭ টি দেশ নিয়ে এ মানবাধিকার কাউন্সিল গঠিত। প্রতি বছর এক তৃতীয়াংশের সদস্যের মেয়াদ শেষ হয়। ১৭ অক্টোবর ২০১৯ জাতিসংঘের সাধারন পরিষদ ১৪টি দেশকে মানবাধিকার কাউন্সিলের নতুন সদস্য নির্বাচিত করে। দেশগুলো হচ্ছে- লিবিয়া. মৌরিতানিয়া, নামিবিয়া, সুদান, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ, দক্ষিণ কোরিয়া, আর্মেনিয়া, পোলান্ড, ব্রাজিল, ভেনিজুয়েলা, জার্মানী এবং নেদারল্যান্ড। নির্বাচিত দেশগুলো ১ জানুয়ারী ২০২০ তিন বছর মেয়াদে ২০২০-২০২২ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবে।

বাংলাদেশ সরকার ২০০৯ সালে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসাবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন গঠন করে। দেশের সকল নাগরিকের মানবাধিকার রক্ষা ও জনগনকে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। তবে বেসরকারীভাবে অনেক আগেই মানবাধিকার বাস্তবায়নে বিভিন্ন সংগঠন বা সংস্থাসমুহ অনেক সক্রিয়ভাবে কাজ করে আসছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার নাম সর্বাঘ্রে আসলেও বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন, বাংলাদেশ মানবাধিকার বুরে্যা, বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ, আইন ও শালিস কেন্দ্র, বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক সোসাইটি, বাংলাদেশ মানবাধিকার ও পরিবেশ ফাউন্ডেশনসহ বেশ কিছু সংস্থা মানবাধিকার বাস্তবায়নে গঠনমুলক কাজ করে আসছে। আন্তর্জাতিক কিছু সংস্থাও বাংলাদেশে কাজ করছে। যাদের মধ্যে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল , হিউম্যান রাইটস্ ওয়াচ, হিউম্যান রাইটস্ মুভমেন্টসহ আরো অনেক সংস্থা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *